সে চেয়েছিলো
একটি সত্যিকারের প্রেমের কবিতা লিখতে।
তার তো
একটাই জীবন। মানুষের জীবনে প্রেমের চেয়ে নির্মল
পিপাসার জল আর কী থাকতে পারে?
সে আরও অনুভব করতো
প্রেমই কবিতার প্রাণ, তার শব্দ, তার ধ্বনি –
তার মন্ত্র।
কিন্তু তবু
তার কবিতা, একটার পর একটা তার নিজের লেখা কবিতা
কি প্রেম কি জল
এমনকি পায়ের নিচের শক্ত মাটি পর্যন্ত খুঁজে পেলো না।
কবিতার জন্য তার দিবস-রজনীর জাগরণ
যা ছিলো তার জীবনের কঠিনতম সত্য
প্রেম নয় – তাকে বারবার অপ্রেমের দারুণ আগুনে ছুঁড়ে দিয়ে
বলতোঃ ‘এখানেই তোর পরিশুদ্ধি। এই যে আগুন, মানুষের পৃথিবী
আগে তার খিদে মেটা। তোর সমস্ত কবিতা, তোদের সমস্ত কবিতা
সে তার ক্ষুধার্ত জিভ দিয়ে চেটে খাবে। তুই মুর্খ,
জীবনের পাঠ এখান থেকেই শুরু কর।‘
দেখতে দেখতে তার কৈশোর গেল, যৌবন গেল,
এখন তার মাথার সব চুল সাদা, হাতের পাঁচ আঙুলে মাঘের শীত!
মাঝেমধ্যেই রাতদুপুরে ঘুমুতে না-পারার যন্ত্রণায়
সে চিৎকার করে উঠতোঃ
‘আমি একটি প্রেমের কবিতা লিখতে চাই, মাত্র একটি প্রেমের কবিতা।‘
আর তখনই শোনা যেত তার মাথার ভিতর, তার বুকের মধ্যে
সেই কঠিন তিরস্কারঃ
‘বুড়ো হয়ে গেলি, এখনও স্বপ্ন দেখছিস!
দ্যাখ! ভাল করে দ্যাখ! তোর চারদিকে
এখন হলুদ হেমন্তের পৃথিবী। কিন্তু তারপর?
তারপর কী দেখছিস? – ধান কাটা হয়ে গেছে, চাষীরা ঘরে ফিরে যাচ্ছে...
কিন্তু মাঝখানে ও কে? ওরা কারা?’
দেখতে দেখতে তার পাকা ধানের হলুদ পৃথিবী খুনখারাপি লাল,
লাল থেকে আগুন! আবার আগুন! ‘আগুন! তুমি আমাকে
সারা জীবন ধরে পুড়িয়েছ। কিন্তু আমি তো
শুদ্ধ হলাম না। শুধু পুড়ে গেলাম। আমি সারা জীবন
শুধু হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘশ্বাস, তাদের সর্বনাশ
আমার জটায় বেঁধে সরস্বতী-নদীর জলে ঝাঁপ দিতে গেলাম,
কোথাও তাকে খুঁজে পেলাম না। তুমি আমাকে কী জীবন শেখাও, আগুন? –
এই কি মানুষের জীবন!’
তার একটিমাত্র প্রেমের কবিতা? ... ‘কবিতা! তুমি এখন
তিন ভুবনের কোন্ অতলান্ত অপ্রেমের মধ্যে ঘুমিয়ে আছ?
ঘুমাও! তুমি ঘুমাও! আর, আমি জেগে থাকি
আর এক আরম্ভের জন্য... মৃত্যুর মুখোমুখি... আমি জেগে থাকি...
একটি সত্যিকারের প্রেমের কবিতা লিখতে।
তার তো
একটাই জীবন। মানুষের জীবনে প্রেমের চেয়ে নির্মল
পিপাসার জল আর কী থাকতে পারে?
সে আরও অনুভব করতো
প্রেমই কবিতার প্রাণ, তার শব্দ, তার ধ্বনি –
তার মন্ত্র।
কিন্তু তবু
তার কবিতা, একটার পর একটা তার নিজের লেখা কবিতা
কি প্রেম কি জল
এমনকি পায়ের নিচের শক্ত মাটি পর্যন্ত খুঁজে পেলো না।
কবিতার জন্য তার দিবস-রজনীর জাগরণ
যা ছিলো তার জীবনের কঠিনতম সত্য
প্রেম নয় – তাকে বারবার অপ্রেমের দারুণ আগুনে ছুঁড়ে দিয়ে
বলতোঃ ‘এখানেই তোর পরিশুদ্ধি। এই যে আগুন, মানুষের পৃথিবী
আগে তার খিদে মেটা। তোর সমস্ত কবিতা, তোদের সমস্ত কবিতা
সে তার ক্ষুধার্ত জিভ দিয়ে চেটে খাবে। তুই মুর্খ,
জীবনের পাঠ এখান থেকেই শুরু কর।‘
দেখতে দেখতে তার কৈশোর গেল, যৌবন গেল,
এখন তার মাথার সব চুল সাদা, হাতের পাঁচ আঙুলে মাঘের শীত!
মাঝেমধ্যেই রাতদুপুরে ঘুমুতে না-পারার যন্ত্রণায়
সে চিৎকার করে উঠতোঃ
‘আমি একটি প্রেমের কবিতা লিখতে চাই, মাত্র একটি প্রেমের কবিতা।‘
আর তখনই শোনা যেত তার মাথার ভিতর, তার বুকের মধ্যে
সেই কঠিন তিরস্কারঃ
‘বুড়ো হয়ে গেলি, এখনও স্বপ্ন দেখছিস!
দ্যাখ! ভাল করে দ্যাখ! তোর চারদিকে
এখন হলুদ হেমন্তের পৃথিবী। কিন্তু তারপর?
তারপর কী দেখছিস? – ধান কাটা হয়ে গেছে, চাষীরা ঘরে ফিরে যাচ্ছে...
কিন্তু মাঝখানে ও কে? ওরা কারা?’
দেখতে দেখতে তার পাকা ধানের হলুদ পৃথিবী খুনখারাপি লাল,
লাল থেকে আগুন! আবার আগুন! ‘আগুন! তুমি আমাকে
সারা জীবন ধরে পুড়িয়েছ। কিন্তু আমি তো
শুদ্ধ হলাম না। শুধু পুড়ে গেলাম। আমি সারা জীবন
শুধু হাজার হাজার মানুষের দীর্ঘশ্বাস, তাদের সর্বনাশ
আমার জটায় বেঁধে সরস্বতী-নদীর জলে ঝাঁপ দিতে গেলাম,
কোথাও তাকে খুঁজে পেলাম না। তুমি আমাকে কী জীবন শেখাও, আগুন? –
এই কি মানুষের জীবন!’
তার একটিমাত্র প্রেমের কবিতা? ... ‘কবিতা! তুমি এখন
তিন ভুবনের কোন্ অতলান্ত অপ্রেমের মধ্যে ঘুমিয়ে আছ?
ঘুমাও! তুমি ঘুমাও! আর, আমি জেগে থাকি
আর এক আরম্ভের জন্য... মৃত্যুর মুখোমুখি... আমি জেগে থাকি...
(হওয়া না-হওয়ার গল্প - বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
সম্পাদকমণ্ডলী-- বেবী সাউ হিন্দোল ভট্টাচার্য মণিশংকর বিশ্বাস সন্দীপন চক্রবর্তী শমীক ঘোষ
লেখা পাঠানোর ঠিকানা ও অন্যান্য যোগাযোগ - abahaman.magazine@gmail.com
No comments:
Post a Comment